ডেঙ্গু সেরে গেলে, কী ধরণের খাবার খেলে দুর্বলতা কাটবে |
সাধারণত যেকোনো অসুস্থতার পরেই আমাদের শরীরে দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, খাবারে অরুচি ইত্যাদি নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে । আর এই সমস্যাগুলো থেকে কত দ্রুত মুক্তি পাওয়া যাবে , তা নির্ভর করে আপনার খাওয়া- দাওয়া, ঘুম, বিশ্রাম এবং আনুষঙ্গিক জীবনযাপনের ওপর। দ্রুত ভালো হতে হলে আমাদের প্রয়োজন শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা আমাদের শরীরের তিনটি বিষয় ঠিক রাখতে সাহায্য করে—
১. শরীরের নিজস্ব শক্তি করতে সাহায্য করে, যা আপনাকে যেকোনো রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।
২. যেকোনো রোগ হলে তা থেকে যত দ্রুত বা তাড়াতাড়ি সম্ভব হয় তার থেকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
৩. প্রতিনিয়ত স্বাভাবিক রাখতে ও পরবর্তী শারীরিক ক্ষয় পূরণ করে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হঠাৎ করে বা এক দিনে তৈরি করা সম্ভব নয়। এটা অর্জন করতে হলে প্রতিদিনের সুষম খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে করা সম্ভব। তাই স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনে অভ্যাস আমাদের গড়ে তুলতে হবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমানে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, শর্করা ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার তালিকা রাখতে হবে। আমাদের শরীরে কাজ করার জন্য যে শক্তি দরকার হয় সেটি শর্করা জাতীয় খাবার খেলে তা পূরণ হয়। শরীরে শর্করা জাতীয় পুষ্টি এনে দেবে বার্লি, চাল-আটার খাবার, ওটস ইত্যাদি। তারপর আছে প্রোটিন। প্রোটিন পেতে খেতে হবে আমাদের কে মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দুধ। ভালোভাবে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের কাজ করতে সক্রিয় ভূমিকা পালনে বিচিজাতীয় খাবার খেতে হবে। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হলো কিছু ভিটামিন, এনজাইম ও মিনারেল, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের (দেহের কোষ, ডিএনএ ও প্রোটিনকে ড্যামেজ করে) বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটা শরীরে রোগের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট আছে। সেগুলো হলো বেটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, ই, লুটেইন সেলেনিয়াম, লাইকোপেন ইত্যাদি। তাই ভালো থাকতে যেসব পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন খেতে হবে, তার মধ্যে আছে লেবু, বিট, ব্রকলি, গাজর, টমেটো, কমলালেবু, পেঁপে, আঙুর, আম, কিউই, আনার, মিষ্টি আলু, ক্যাপসিকাম, ফুলকপি, করলা, জলপাই, আনারস, আদা, রসুন, হলুদ, রঙিন পাতাকপি, পালং ও অন্যান্য সবুজ শাক, কমলালেবু, পেঁপে, আঙুর, আম, কিউই, আনার, তরমুজ, বেরি, দারুচিনি, গোলমরিচ, সিমের বিচি, মটরশুঁটি, বাদাম, টক দই, গ্রিন টি ইত্যাদি। এ ছাড়া ভিটামিন বি ৬, জিংক–জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে।
এছাড়া শরীর ফিট রাখতে কিছু খাবার আপনাকে বাদ দিতে হবে। তার মধ্যে আছে টোব্যাকো (জর্দা, তামাক, সাদাপাতা, খয়ের), কার্বোনেটেড ড্রিংকস (কোমল পানীয়), সিগারেট, বিড়ি। এসব মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতায় বাধা দিয়ে ফুসফুস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে থাকে।
খাবারের পাশাপাশি আপনাদের এখন প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমান বিশ্রাম। ঠিকমতো ঘুমালে শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুগুলো আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে সাহায্য করতে পারে। অপর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর ফলে শরীরে কর্টিসল হরমোনের চাপ বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে, তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থাৎ ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।